ক্ষমতাচ্যুত শাসকরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে কোথায় যায়?

 

ইরানের রেজা শাহ পাহলভি (বামে), পাকিস্তানের পারভেজ মুশাররফ (মাঝে), ফিলিপিন্সের ফার্ডিনান্ড মার্কোস (ডানে)


বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পর থেকে নানা আলোচনা চলছে যে তিনি কি শেষ পর্যন্ত ভারতেই থাকবেন নাকি অন্য কোন দেশে আশ্রয় নেবেন?


সম্প্রতি আবারো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে বলছেন যে শেখ হাসিনা ভারতে থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা বক্তব্যের বিষয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকরা জানতে চান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে।

জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “ওনার অবস্থান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা দিল্লিতে খোঁজ করেছি, আমিরাতেও খোঁজ করেছি, কনফার্মেশন অফিসিয়ালি কেউ দিতে পারেনি।”

মি. হোসেন বলেন, “আপনারাও যেমন দেখেছেন, আমরাও দেখেছি উনি আজমানে সম্ভবত গেছেন। কিন্তু এটা রিকনফার্ম করার চেষ্টা করেও আমরা সফল হইনি।”


শেখ হাসিনা দিল্লি ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশে চলে গেছেন - এ জাতীয় সব খবরকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্র কিংবা সরকার প্রধানদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার দেশে ফিরেছেন। অনেকে আবার দেশ ছেড়ে যাননি।


যেসব স্বৈরশাসক ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়তে ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় তারা কোথায় যায়?


যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ইউনিভার্সিটির দ্য জার্নাল অব পলিটিক্স-এ আবদেল এসক্রিবা এবং ড্যানিয়েল ক্রাকমারিক এক গবেষণা মূলক নিবন্ধে লিখেছেন, স্বৈরশাসকরা পালিয়ে যেসব দেশে আশ্রয় নিতে চায় সেখানে বেশ কয়েকটি বিষয় বিষয় কাজ করে। এগুলো হচ্ছে

  • একটি দেশের সাথে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় মিল কতটুকু আছে
  • ভৌগোলিক দূরত্ব কতটা
  • দেশটি অতীতে কোন স্বৈরাচারদের আশ্রয় দিয়েছে কী না
দেশটি সামরিকভাবে শক্তিশালী কী না।

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচাররা সাধারণত গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে আশ্রয় নিতে চায় না বলে উল্লেখ করেন আবদেল এসক্রিবা এবং ড্যানিয়েল ক্রাকমারিক।

অতীতে দেখা গেছে, মুসলিমপ্রধান দেশগুলো থেকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারদের অনেকেই সৗদি আরবে আশ্রয় নিয়েছে। ২০২২ সালে মিডল ইস্ট আই পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, সৌদি আরব যাদের আশ্রয় দিয়েছে তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে খরচ বহন করেছে সৌদি সরকার। এছাড়া পশ্চিমা দেশে আশ্রয় নেবার নজিরও রয়েছে।



কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.